আজকের আলোচনার বিষয় হলো “আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম”। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া, যা আমাদের শয়তানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার শিক্ষা দেয়।
এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানবো:⤵️
- বাক্যের আরবি উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ—এর সঠিক উচ্চারণ এবং অর্থ কী।
- প্রতিটি শব্দের বিশ্লেষণ—এই বাক্যের প্রতিটি শব্দের গভীর অর্থ ও তাৎপর্য।
- কুরআন ও হাদিসে এর গুরুত্ব—এই দোয়া সম্পর্কে আল্লাহর বাণী ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা।
- এর ফজিলত ও ব্যবহার— এই দোয়া কেন পড়া উচিত এবং জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে এটি আমাদের সাহায্য করে।
আশা করছি, এই আলোচনা থেকে আমরা এই দোয়ার তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা গভীরভাবে বুঝতে পারব ইনশাআল্লহ।
،،বি-দ্র:- “আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম” এই বাংলা উচ্চারণটি সঠিক নয় সঠিক উচ্চারণ নিচে আসছে পড়তে থাকুন,,
আরবি উচ্চারণ:- أَعُوذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
শুদ্ধ করে বাংলা উচ্চারণ:- আউ-জুবিল্লা-হি মিনাশ শাই ত্ব- নির রজি-ম
বাংলা অর্থ:- “আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি বা চাইতেছি।”
মর্মার্থ :- একজন ব্যক্তি শয়তানের কুমন্ত্রণার প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছে।
এটি এমন একটি বাক্য, যা আল্লাহর কাছে শয়তানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার জন্য পাঠ করা হয়। এটি কুরআন পাঠ শুরু করার আগে এবং জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পাঠ করা হয়।
আরবি শব্দের বিশ্লেষণ
- أَعُوذُ (আউযু): এটি একটি ক্রিয়া, যার অর্থ “আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”
- بِاللّٰهِ (বিল্লাহি): “আল্লাহর দ্বারা” বা “আল্লাহর কাছে।
- مِن (মিন): “থেকে।”
- الشَّيْطَانِ (আশ-শাইতন): “শয়তান।”
- الرَّجِيمِ (আর-রজিম): “বিতাড়িত” বা “অভিশপ্ত।”
এই বাক্যের অর্থ হলো, একজন ব্যক্তি শয়তানের কুমন্ত্রণার প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছে।
গুরুত্ব
আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম পাঠ করা প্রত্যেক ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য একটি শক্তিশালী দোয়া। কুরআন পাঠ শুরু করার আগে এই বাক্যটি পাঠ করা বাধ্যতামূলক, কারণ এটি আমাদের মনকে শুদ্ধ ও একাগ্র করে এবং শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
কুরআনে উল্লেখ
“আউ-জুবিল্লা-হি মিনাশ শাই ত্ব- নির রজি-ম” কুরআনে সরাসরি উল্লেখিত না হলেও এর ভিত্তি সূরা আল-আ’রাফে রয়েছে:
“যখন কুরআন পাঠ করবে, তখন বিতাড়িত শয়তানের থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো।”
(সূরা আল-আ’রাফ, ৭:২০০)
হাদিসে উল্লেখ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময় এই দোয়া পাঠ করার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে:
“যখন কোনো ব্যক্তি ‘আউজুবিল্লাহি’ বলে, তখন শয়তান দূরে সরে যায়।”
(সহীহ মুসলিম)
ফজিলত
- শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি: এই বাক্যটি শয়তানের প্ররোচনা থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।
- মনের প্রশান্তি: এটি পাঠ করলে মানুষের মন আল্লাহর প্রতি একাগ্র হয়।
- আল্লাহর করুণা অর্জন: “আউজুবিল্লাহি” পাঠ করা আল্লাহর প্রতি বিনম্রতা এবং নির্ভরতার প্রতীক।
ব্যবহার
কুরআন পাঠের আগে: কুরআন শুরু করার আগে এটি পড়া বাধ্যতামূলক।
মনের অশান্তিতে: অস্থিরতা বা কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে।
কোনো ভালো কাজের আগে: শয়তানের প্ররোচনা থেকে সুরক্ষা পেতে।
সারাংশ
“আউ-জুবিল্লা-হি মিনাশ শাই ত্ব- নির রজি-ম” একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু শক্তিশালী দোয়া, যা দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি পাঠ করার মাধ্যমে একজন মুসলিম শয়তানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকতে পারে এবং আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারে। এটি পাঠ করা একটি প্রশংসনীয় অভ্যাস, যা প্রতিটি মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
بسم الله الرحمن الرحيم
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
অর্থ:- পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু
Hi, this is a comment.
To get started with moderating, editing, and deleting comments, please visit the Comments screen in the dashboard.
Commenter avatars come from Gravatar.