বকশিশ শব্দটি ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো কাউকে খুশি হয়ে বা সন্তুষ্টি প্রকাশের জন্য দেওয়া অতিরিক্ত অর্থ বা উপহার। এটি সাধারণত সেবা বা ভালো কাজের প্রতিদান হিসেবে প্রদান করা হয়। বাংলায় বকশিশ বলতে যেমন হোটেল বা রেস্তোরাঁয় কাউকে টিপস দেওয়া বোঝানো হয়, তেমনই অন্য যেকোনো প্রসঙ্গেও এটি ব্যবহার হতে পারে।

ইসলামী শরীয়তের আলোকে বকশিশ চেয়ে নেওয়া একটি সংবেদনশীল বিষয়, কারণ এটি ব্যক্তির নৈতিকতা, ইখলাস (বিশুদ্ধ উদ্দেশ্য), এবং অন্যের প্রতি আস্থা ও দানের ইচ্ছার সাথে সম্পর্কিত। শরীয়তের দৃষ্টিতে বকশিশ চেয়ে নেওয়া বা তা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা রয়েছে:

১. স্বেচ্ছায় প্রদান করা দানের গুরুত্ব

ইসলামে কোনো উপহার, দান, বা বকশিশ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তা স্বেচ্ছায় এবং খুশি মনে প্রদান করা হওয়া উচিত। কারো কাছ থেকে জোর করে বা নির্ধারিতভাবে চেয়ে নেওয়া শিষ্টাচারের পরিপন্থী এবং এটি মানুষের মনে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।

২. চাওয়ার প্রতি নিষেধাজ্ঞা

ইসলামে চাওয়ার প্রতি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:

> “যে ব্যক্তি মানুষের কাছে হাত পাতবে, সে নিজের জন্য জাহান্নামের এক টুকরো চাইবে।”
(সহীহ মুসলিম: ১০৪১)

৩. দানের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি

তবে কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে সাহায্য বা দান গ্রহণ করা বৈধ হতে পারে:

যদি ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে অভাবগ্রস্ত হন।

যদি ব্যক্তি অক্ষম হন এবং কাজ করার সামর্থ্য না থাকে।

যদি কোনো বৈধ কাজের প্রতিদানে অন্য ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কিছু প্রদান করে।

৪. ইখলাস বজায় রাখা

যদি কারো কাছ থেকে বকশিশ বা উপহার গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা গ্রহণের উদ্দেশ্য বিশুদ্ধ হওয়া উচিত এবং কোনো ধরণের লোভ বা জবরদস্তি এড়ানো উচিত।

সারসংক্ষেপ

বকশিশ চেয়ে নেওয়া ইসলামী আদর্শ অনুযায়ী প্রয়োজন বা বাস্তব কারণ ছাড়া উচিত নয়। যদি কেউ স্বেচ্ছায় বকশিশ দেয়, তবে তা গ্রহণ করা যেতে পারে, তবে সেটিও বিনয় ও কৃতজ্ঞতার সাথে হওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *