<<

রোযা সংক্রান্ত মাসায়িল

—————– [পার্ট :১০ এবং শেষ]——————

মাসআলা:৬০) রোযার হালতে গীবত করলে, গালি-গালাজ করলে, টিভি-সিনেমা ইত্যাদি দেখলে, গান-বাদ্য শ্রবণ করলে এবং যে কোনো বড় ধরনের গুনাহে লিপ্ত হলে রোযা মাকরূহ হয়ে যায়। আর এ কাজগুলো যে সর্বাবস্থায় হারাম, তা তো বলাই বাহুল্য।

হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেছেন—

إذا كان يوم صوم أحدكم فلا يرفث ولا يصخب.

‘তোমাদের কেউ যখন রোযা রাখে তখন সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং শোরগোল, হট্টগোলে লিপ্ত না হয়। (সহীহ বুখারী হাদীস : ১৯০৪)

সুনানে আবু দাউদের রেওয়ায়েতে এ শব্দ রয়েছে, ‘রোযাদার যেন কোনো অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত না হয়। (হাদীস : ৩৩৬৩ (১/৩২২)

হযরত আবু হুরায়রা (রাদিআল্লাহু তা’আলা ‘আনহু) বলেন, নবী কারীম (ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াছল্লাম) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা-প্রতারণা ও গুনাহের কাজ ত্যাগ করে না আল্লাহ্ তা’আলার নিকট তার পানাহার থেকে বিরত থাকার কোনো মূল্য নেই।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৩৬২ (১/৩২২)

📚যেসব কাজ রোযাদারের জন্য মাকরূহ নয়:

মাসআলা:৬১) রোযার হালতে প্রয়োজনে জিহবা দ্বারা কোনো কিছুর স্বাদ নেওয়া বা প্রয়োজনে বাচ্চাদের জন্য খাদ্য চিবানো মাকরূহ নয়। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যেন স্বাদ গলার ভেতরে চলে না যায়।

ইব্রাহীম নাখায়ী (রাহ:) রোযাদার মহিলা বাচ্চার জন্য খাদ্য চিবানোকে দোষের বিষয় মনে করতেন না। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৬; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৬)

মাসআলা:৬২) রোযাদারের জন্য সুরমা লাগানো বা সুগন্ধি ব্যবহার করা মাকরূহ নয়।

হযরত আতা (রাহ:) বলেন, ‘রোযাদারের জন্য সুরমা ব্যবহার করাতে দোষ নেই। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮০)

মাসআলা:৬৩) রোযা অবস্থায়ও মিসওয়াক করা সুন্নত। এমনকি কাঁচা ডাল দ্বারা মিসওয়াক করাও মাকরূহ নয়।

হযরত আমির ইবনে রবীয়া (রাদিআল্লাহু তা’আলা ‘আনহু) বলেন, নবী কারীম (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াছাল্লাম) কে আমি রোযার হালতে অসংখ্যবার মিসওয়াক করতে দেখেছি। (সহীহ বুখারী ১/২৫৯; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০০)

হযরত হাসান (রাহ:)কে রোযা অবস্থায় দিনের শেষে মিসওয়াক করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘রোযা অবস্থায় দিনের শেষে মিসওয়াক করতে কোনো অসুবিধা নেই। মিসওয়াক পবিত্রতার মাধ্যম। অতএব দিনের শুরুতে এবং শেষেও মিসওয়াক করো।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০২)

হযরত ইব্রাহীম (রাহ:) বলেন, ‘রোযা অবস্থায় দিনের শুরু ও শেষে মিসওয়াক করতে কোনো অসুবিধা নেই।’ (প্রাগুক্ত ৪/২০৩)

হযরত মুজাহিদ (রাহ:) রোযা অবস্থায় তাজা মিসওয়াক ব্যবহার করাকে দোষণীয় মনে করতেন না। সুফিয়ান সাওরী রাহ. থেকেও অনুরূপ বক্তব্য বর্ণিত আছে। (প্রাগুক্ত ৪/২০২; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮১)

আল্লাহ্ পাক আমাদেরকে মাস’আলা গুলোর উপর আমল করার তাউফীক দান করুন।আমীন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *